জীবন ও ভাবনা: শিল্প

আমি শিল্পকর্ম সংগ্রহ করি। তাঁদেরই শিল্পকর্ম আমি সংগ্রহ করি, যাঁদের সঙ্গে আমার সরাসরি পরিচয় ছিল বা ঘনিষ্ঠতা ছিল। যাঁদের জীবন থেকে তাঁদের শিল্পকর্মগুলোকে বুঝতে পারি। যাঁদের আমি জানি–বুঝি, যাঁদের আমি ভালোবাসি, তাঁদের স্মৃতি আমি রক্ষা করতে চাই।

আমার সংগ্রহের মধ্যে আছে কামরুল হাসানের শিল্পকর্ম। বাংলাদেশের একজন শিল্পী, আমি মনে করি যিনি বিশ্বপর্যায়ের ছিলেন। কিন্তু আমাদের অবহেলার কারণে তিনি সে জায়গায় পৌঁছাতে পারেননি। আমার সংগ্রহে কামরুল হাসানের শিল্পকর্মের সঙ্গে আছে মোহাম্মদ কিবরিয়া, সফিউদ্দীন আহমেদ, রশিদ চৌধুরী, মুর্তজা বশীর, কাইয়ম চৌধুরী, কাজী আবদুল বাসেত, রফিকুন নবী প্রমুখের শিল্পকর্ম। পরের প্রজন্মের শিল্পীদের মধ্যে শহীদ কবির ও কাজী গিয়াস উদ্দিনের শিল্পকর্ম সংগ্রহ করেছি। এটাও আমার ভাবলে অবাক হতে হয় যে, বাংলাদেশের তিনজন প্রধান শিল্পী মোহাম্মদ কিবরিয়া, মুর্তজা বশীর এবং কাজী আবদুল বাসেত নবাবপুর গভর্নমেন্ট হাই স্কুলে আমাদের ড্রং টিচার ছিলেন। ভারতে আমার যাওয়া-আসা ছিল বলে সেখানকার অনেক শিল্পীর সঙ্গেই ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। তাঁরা আমাকে তাঁদের ছবি উপহার দিয়েছেন। অল্প অর্থেও কিছু ছবি সংগ্রহ করেছি। অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর, নন্দলাল বসু, যামিনী রায়, পরিতোষ সেন, কে জি সুব্রামানিয়ান, গণেশ পাইন, বিকাশ ভট্টাচার্য, যোগেন চৌধুরী—তাঁরা ভারতের শ্রেষ্ঠ শিল্পী, তাঁদের ছবি আছে।

  • ২০১৯ সালের ২৯ আগস্ট সিলেট শুভানুধ্যায়ীদের আয়োজনে প্রদত্ত বক্তৃতা থেকে অংশবিশেষ। বক্তৃতাটির শ্রুতলিখন কিছু পরিমার্জনাসহ প্রকাশিত হয়েছিল আবুল হাসনাত সম্পাদিত শিল্প–সাহিত্যের মাসিক পত্রিকা ‘কালি ও কলম’–এ।